সাম্প্রতিক বছরসমূহের (৩ বছর) প্রধান অর্জনসমূহ:
দেশের উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রশাসনিক কর্মকান্ডের জন্য নির্ভরযোগ্য ও হালনাগাদ তথ্য সরবরাহ করা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দায়িত্ব। জাতীয় ও স্থানীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে নিয়োজিত পরিকল্পনাবিদ, সরকারি-বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য নিয়মিতভাবে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, সঙ্কলন ও প্রকাশের দায়িত্ব বিবিএস পালন করে আসছে। সম্প্রতি জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র (National Strategy for the Development of Statistics-NSDS) এবং পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। ফলে বিবিএস-এর কাজের পরিধি সম্প্রসারিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিবিএস এর সাংগঠনিক কাঠামো পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে এবং একে আরো শক্তিশালী ও যৌক্তিকীকরণের কাজ চলছে। পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ এর ৬ ধারার আওতায় বিভিন্ন শুমারি ও আর্থ-সামাজিক এবং জনমিতিক ক্ষেত্র সমূহে জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। ১৫-১৯ মার্চ ২০১১ দেশের পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারই প্রথম iCADE Software ব্যবহার ও ICR মেশিনে ২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে শুমারির নির্ভুল ফলাফল দেয়া সম্ভব হয়েছে। এ শুমারীর অধীন ০৫ (পাঁচ) টি ন্যাশনাল রিপোর্ট, ৬৪ (চৌষট্টি) টি জেলা রিপোর্ট ও ৬৪টি কমিউনিটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১-এর তথ্য ব্যবহার করে ১৪ (চৌদ্দ) টি মনোগ্রাফ এবং ০১ (এক) টি পপুলেশন প্রজেকশন প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় বিবিএস-এর ওয়েবসাইটে Redatam software ও শুমারি ২০১১ এর প্রাথমিক উপাত্ত আপলোড করা হয়েছে যা মাধ্যমে ব্যবহারকারীগণ তাদের চাহিদামত টেবিল, গ্রাফ, চার্ট ইত্যাদি প্রস্তুত করতে পারবেন। এছাড়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে বিভাগীয় পর্যায়ে ICT বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহে আসবাবপত্র ও বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করা হয়েছে। ২০১৩ সালের মার্চ-মে মাসে বাংলাদেশে তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে এবারই প্রথম ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের (UISC)মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে স্থাপিত সরকারের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্ভাব্য সর্বনিম্ন সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য বিবিএস সদর দপ্তরে কম্পিউটারে ধারণ করা হয়। শুমারির আওতায় মোট ৬৬টি রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে যার মধ্যে ০১টি National Report প্রকাশিত হয়েছে, ০১টি Administrative Report ও ৬৪ টি Zila Report শিঘ্রই প্রকাশ করা হবে। অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ প্রকল্পের আওতায় বিজনেস রেজিস্টার (BusinessRegister) প্রস্তুত কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এটি দেশের অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান প্রণয়নের প্রধান কাঠামো হিসেবে ব্যবহৃত হবে। বিজনেস রেজিস্টারে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, আইনগত কাঠামো, কার্যাবলীর ধরণ, নিয়োজিত জনবলের সংখ্যা, বাৎসরিক গড় উৎপাদন, মোট সম্পদের পরিমাণ ইত্যাদি তথ্য থাকবে। অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ প্রকল্পের আওতায় ‘প্রবাস আয়ের বিনিয়োগ সম্পর্কিত জরিপ ২০১৬’ পরিচালনা করেছে। এ জরিপের মাধ্যমে প্রবাস আয়ের বিনিয়োগের বিভিন্ন খাত সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সঞ্চয়ের বিভিন্ন খাতের তথ্য, প্রবাসীর তথ্য ও খানার আর্থ-সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে ও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ব্যবহার করে প্রবাস আয়ের সুষ্ঠু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা ও সুপারিশ প্রণয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে অন্তর্ভুক্ত করে সমন্বিত কৃষি শুমারি ২০১৮ এর প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে। বস্তি শুমারি ও ভাসমান লোকগণনা ২০১৪ কর্মসূচির চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। নিয়মিত ভাবে বাৎসরিক ভিত্তিতে ১২৬ টি ফসলের আয়তন ও উৎপাদন হিসাব প্রাক্কলন করা হয়েছে। ভূমি ও সেচ পরিসংখ্যান প্রস্তুত হয়েছে। ২০১৪ সালের কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষপ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। উৎপাদনশীলতা জরিপ কর্মসূচির আওতায় ৯টি ফসলের জরিপ সম্পন্ন করে রিপোর্ট প্রণয়ন করা হয়েছে। হেলথ এন্ড মরবিডিটি স্ট্যাটাস সার্ভে ২০১৪, এডুকেশন হাউজহোল্ড সার্ভে, ২০১৪, আইসিটি ইউজ এন্ড একসেস বাই ইনডিভিজুয়ালস এন্ড হাউজহোল্ড, ২০১৩ লেবার ফোর্স সার্ভে, ২০১৩ এবং লেবার মার্কেট ইনফরমেশন সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় কোয়ার্টারলি লেবার ফোর্স সার্ভে এর চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। মনিটরিং দ্যা সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস অব বাংলাদেশ (এমএসভিএসবি) প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে নির্বাচিত ২,০১২ টি নুমনা এলাকা হতে ১১ ধরণের তফসিলের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের ভিত্তিতে বাংলাদেশের Vital Statistics নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ‘জনজীবনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কর্মসূচি’-এর রিপোর্ট প্রকাশের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দেশের সকল ভৌগোলিক এলাকার জন্য একটি সুবিন্যস্ত এবং অভিন্ন কোডিং পদ্ধতি চালু করার লক্ষ্যে জিও কোড সিস্টেম প্রণয়নের কাজ চলছে। Bangladesh Standard Classification of Occupation (BSCO-6 digit) এবং Bangladesh Standard Industrial Classification (BSIC-5 digit) প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও বিবিএস এর নিয়মিত কার্যক্রম যেমন: প্রতিমাসের ভোক্তার মূল্য সূচক (Consumer Price Index-CPI) পরবর্তী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করা হয়। ২০১৪-১৫ সালের চূড়ান্ত GDP ও ২০১৫-১৬ সালের প্রভিশনাল GDP প্রকাশিত হয়েছে। Quantum Index of Industrial Production-এর ভিত্তি বছর ১৯৮৯-৯০ থেকে পরিবর্তন করে ২০০৫-০৬ করা হয়েছে। Multiple Indicator Cluster Survey (MICS) 2013, Survey of Manufacturing Industries 2012, Compilation of Gender Statistics 2012, Child and Mother Nutrition Survey 2012, Health and Morbidity Status Survey 2012 এর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। Violence Against Women (VAW) Survey-2015 এর রিপোর্ট প্রকাশের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রথমবারের মতো Food Balance Sheet (২০০৯-১৩) প্রস্তুত করা হয়েছে। ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরের GDP Rebasing-এর বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত ‘Bangladesh National Accounts Statistics: Sources and Methods’ প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরে ১৯৭২-৭৩ থেকে ১৯৯৪-৯৫ পর্যন্ত উৎপাদন পদ্ধতিতে জিডিপি প্রাক্কলনের কাজ চলমান রয়েছে। বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় ছিটমহল এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ছিটমহলসমূহে Opted person-এর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তাছাড়াও বিবিএসএর নিয়মিত প্রকাশনা যেমন পরিসংখ্যান পকেট বই, পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ এবং মাসিক পরিসংখ্যান বুলেটিন নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস